Monday 14 August 2017

জুমার খুতবা যুলকদ মাসের প্রথম খুতবা

 মাতৃভাষা

নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লী আলা রাসূলিহীল কারীম। আম্মা বাদ,
সম্মানিত উপস্থিতি, আজ যুলকাদ মাসের প্রথম জুমুআ। আজ আমরা মাতৃভাষা ও মাতৃভাষা দিবস বিষয়ে আলোচনা করব, ইনশা আল্লাহ।
সম্মানিত উপস্থিতি, মহান আল্লাহ মানুষকে যত নেয়ামত দিয়েছেন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মানুষের ভাষা বা কথা বলার ক্ষমতা। এ ক্ষমতাই মানুষকে অন্য সকল প্রাণী থেকে পৃথক ও বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছে। মহান আল্লাহ এ বিষয়ে বলেন:
الرَّحْمَنُ عَلَّمَ الْقُرْآَنَ خَلَقَ الإِنْسَانَ عَلَّمَهُ الْبَيَانَ.
দয়াময় আল্লাহ, তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন, তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তিনিই তাকে শিক্ষা দিয়েছেন ভাব প্রকাশের ক্ষমতা বা কথা বলার ক্ষমতা।”1
মহান আল্লাহর মহান ক্ষমতার নিদর্শন এ পৃথিবীর বৈচিত্র। পৃথিবীর মানুষ, প্রকৃতি ও অন্যান্য সকল সৃষ্টির বৈচিত্রের ন্যায় ভাষার বৈচিত্রও আল্লাহর মহান কুদরতের মহা-নিদর্শন। আল্লাহ বলেন:
وَمِنْ آَيَاتِهِ خَلْقُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَاخْتِلافُ أَلْسِنَتِكُمْ وَأَلْوَانِكُمْ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآَيَاتٍ لِلْعَالِمِينَ
তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। 2
এভাবে আমরা দেখছি যে, পৃথিবীর সকল মানুষ যেমন মহান আল্লহর প্রিয় সৃষ্টি, সকল ভাষাও তেমনি আল্লাহর প্রিয় সৃষ্টি, কাজেই কোনো ভাষাকে অন্য ভাষা থেকে অধিকমর্যাদাময় বা আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় বা কোনো ভাষাকে আল্লাহর দৃষ্টিতে ঘৃণ্য বলে মনে করার কোনো অবকাশ নেই। প্রত্যেক মানুষের কাছে নিজের পিতামাতা ও দেশের যেমন মর্যাদা ও গুরুত্ব, তেমনি গুরুত্ব ও মর্যাদা তার মাতৃভাষার। মাতৃভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন:
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ رَسُولٍ إِلا بِلِسَانِ قَوْمِهِ
স্বজাতির ভাষা বা মাতৃভাষা ছাড়া আমি কোনো রাসূলই প্রেরণ করিনি।”3
হাযেরীন, ইসলামের এ মূলনীতির ভিত্তিতে বিশ্বের সকল দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠী তার মাতৃভাষাকে যথাযথ মর্যাদা ও গুরত্ব দিয়েছে, মাতৃভাষায় অন্য সকল জ্ঞানের ন্যায় ইসলামী জ্ঞানেরও চর্চা করেছে এবং মাতৃভাষাকে ইসলামী সাহিত্যকর্মে সমৃদ্ধ করেছে। আরবী ভাষাকে যেহেতু মহান আল্লাহ তাঁর মহান গ্রন্থ আল-কুরআন ও মহান নবী মুহাম্মাদ (স)-এর ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেছেন এজন্য আরবী ভাষাকে বিশেষ মর্যাদা ও গুরুত্ব প্রদান করা বিশ্বের সকল ভাষার সকল মুসলিমের ঈমানের দায়িত্ব। আরবীর মর্যাদা ও গুরুত্ব প্রদানের পাশাপাশি তারা মাতৃভাষাকে সমৃদ্ধ করেছেন।
আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা বাংলার বিকাশেও মুসলমানদের অবদান ছিল ব্যাপক। বাংলায় মুসলিম আগমনের পূর্বে আর্য ও ব্রাহ্মণ শাসিত ভারতীয় সমাজে বাংলা ভাষাকে অত্যন্ত ঘৃণার চোখে দেখা হতো। মুসলিম শাসনামলে সুলতানগণ বাংলাভাষা চর্চায় উৎসাহ দেন। তাদের উৎসাহে বাংলাভাষায় সাহিত্য চর্চা ব্যাপকতা লাভ করে এবং রামায়ন, মহাভারত ইত্যাদি ধর্মগ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ করা হয়। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, পরবর্তীকালে হিন্দু পণ্ডিতগণ বাংলাকে হিন্দু ধর্মীয় ভাষা, “বাঙালীমানেই হিন্দু এবং বাঙালী জাতীয়তামানেই হিন্দু জাতীয়তা বলে দাবি করতে থাকেন। যদিও বাংলার সংখ্যাগরিষ্ট জনগণ ছিলেন মুসলমান, কিন্তু হিন্দু পণ্ডিতগণ তাদেরকে বাঙালী বলে মানতে রাজি ছিলেন না। এজন্য আমরা দেখি যে, হিন্দু ও মুসলমান ছেলেদের মধ্যকার খেলার কথা বলতে যেয়ে শরৎচন্দ্র লিখেন বাঙালী ও মুসলমানছেলে। এখনো পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের পরিচয়ে বাঙালী লিখতে আপত্তি করা হয়। তাদের মতে বাঙালীত্বমানেই হিন্দুত্ব এবং হিন্দুত্ব মানেই আর্য ধর্ম ও ধর্মীয় সংস্কৃতি।
সম্মানিত হাযেরীন, হিন্দু পণ্ডিতগণের এরূপ উন্নাসিকতার বিপরীতে অনেক বাঙালী মুসলিমের মধ্যেও এ বিষয়ে উদ্ভট মুর্খতা বিদ্যমান। অজ্ঞতা ও সরলতা বশতঃ অনেক সাধারণ বাঙ্গালী মুসলিম ও আলিম বাংলাভাষায় ইসলাম চর্চা অবহেলা করেছেন। তারা ধারণা করেছেন যে, বাংলা ভাষায় দেবদেবীর নাম আছে বা হিন্দুরা এ ভাষা ব্যবহার করেন কাজেই ভাষাটি বোধহয় হিন্দুদেরই ভাষা, অথবা এ ভাষায় বোধহয় কুরআন, হাদীস, ফিক্হ, উসূল ও অন্যান্য ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা উচিত নয় বা সম্ভব নয়। এরূপ চিন্তা কঠিন আপত্তিকর ও নিরেট অজ্ঞতা ছাড়া আর কিছুই নয়। ইসলামের আগমনের পূর্বে আরবী ভাষা ছিল পৌত্তলিক মুশরিকদের ভাষা। ফারসী ভাষা প্রাচীন কাল থেকে মুশরিক অগ্নি উপাসকদের ভাষা। উর্দু ভাষা ভারতের সংস্কৃত ভাষা থেকে উদ্ভুত ও ভারতীয় হিন্দু-মুসলিম সকলের ব্যবহৃত একটি ভাষা। এ সকল ভাষার অনুসারীরা নিজেদের ভাষায় ইসলাম চর্চা করেছেন এবং এ সকল ভাষা ইসলামী সভ্যতার অংশ হয়ে গিয়েছে।
১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির প্রেক্ষাপটে ইংরেজদের দেওয়া ওয়াদা মোতাবেক ভারতকে স্বরাজপ্রদানের রাজনৈতিক ইস্যুটি তৎকালীন ভারতীয় রাজনীতিতে প্রাধান্য পায়। এরই সাথে স্বাধীন  ভারতের সাধারণ ভাষা বা লিংগুয়া ফ্রাঙ্কাকি হবে তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়। মহাত্মা গান্ধী এ বিষয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতামত চান। কবিগুরু লিখিত মতামত প্রদান করেন যে, একমাত্র হিন্দিভাষাই ভারতের লিংগুয়া ফ্রাঙ্কাবা সাধারণ ভাষা বা রাষ্ট্র ভাষাহতে পারে। দু বছর পরে ১৯২০ সালে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীতে ভারতের লিংগুয়া ফ্রাঙ্কাসম্পর্কে আলোচনার জন্য এক মহাসভার আয়োজন করা হয়। এ মহাসভায় কবিগুরু ইংরেজির পক্ষে এবং ইংরেজী না হলে হিন্দিকে লিংগুয়া ফ্রাঙ্কাবা রাষ্ট্রভাষার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। কিন্তু বরেণ্য ভাষাবিদ ড. মোহাম্মাদ শহীদুল্লাহ ভাষাতাত্ত্বিক তথ্যাদির ভিত্তিতে প্রমাণ করেন যে, হিন্দির চেয়ে বাংলা অনেক উন্নত ভাষা এবং বাংলা ভাষাই ভারতের লিংগুয়া ফ্রাঙ্কাহওয়ার যোগ্যতা রাখে। প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রভাষা বাংলার পক্ষে এ ছিল প্রথম আওয়াজ।
হাযেরীন, বাংলার যোগ্যতা প্রমাণিত হওয়ার সত্ত্বেও বাঙালী ও অবাঙালী সকল ভারতীয় কংগ্রেস নেতা হিন্দিকে স্বাধীন ভারতের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হওয়ার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় অনেক বাঙালী-অবাঙালী ভারতীয় মুসলিম নেতৃবৃন্দ উর্দু”-কে ভারতের একমাত্র রাষ্টভাষা হওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। বস্তুত উর্দু ও হিন্দি একই ভাষার দুটি রূপ বা প্রকাশ মাত্র। উত্তর ও মধ্য ভারতের মুসলিমগণ উর্দুরূপ ব্যবহার করেন আর হিন্দুগণ হিন্দিরূপ ব্যবহার করেন।
হাযেরীন, পরবর্তীতে ভারতকে স্বাধীন পাকিস্তান ও স্বাধীন ভারতে বিভক্ত করে স্বাধীনতা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। তখন কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ হিন্দিকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা বলে ঘোষণা দেন। এর বিপরীতে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বলে ঘোষণা দেওয়ার দাবি করেন অনেকে।
হাযেরীন, বাঙ্গালী মুসলমানদের অজ্ঞতা ও সরলতার সুযোগে অবাঙ্গালী মুসলিমরা তাদের বুঝান যে, উর্দু ইসলামী ভাষা। ফলে ১৯৪৭ এর  আগে থেকেই অনেক বাঙালী মুসলিম উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি করতে থাকেন।  আমরা আগেই বলেছি যে, ইসলামের সাথে উর্দু বা ফার্সী ভাষার কোনোরূপ বিশেষ সম্পর্ক নেই। উর্দুও বাংলার মত সংস্কৃতি থেকে জন্মপ্রাপ্ত ভারতীয় ভাষা। তবে বাংলা ভাষা উর্দুর চেয়ে অনেক বেশি সমৃদ্ধ ও উন্নত। তবুও প্রতারণামূলকভাবে এরূপ দাবি করা হয়। অনেক আলিম, মুসলিম রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতা এরূপ দাবির প্রতিবাদ করেন। তাঁরা দাবি করেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা অবশ্যই বাংলা হতে হবে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভের পরও এ বিষয়ে বিতর্ক চলতে থাকে। তমদ্দুন মজলিসও অন্যান্য সংস্থা ও ব্যক্তি পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা ও পূর্ব-পাকিস্তানের সরকারী ভাষা হিসেবে ঘোষণা করার জোর দাবি জানান, যা এদেশের মানুষের গণদাবিতে পরিণত হয়। ১৯৪৮ সালের ১১ই মার্চ এ দাবির পক্ষে ঢাকায় সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়।
১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ পূর্ব পাকিস্তান সফরে আসেন। তিনি ঢাকায় দুটি সভায় বক্তৃতা দেন এবং দু জায়গাতেই বাংলাভাষার দাবি উপেক্ষা করে একমাত্র উর্দুকেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন। এ সময় সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে ভাষা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৫২ সালের শুরু থেকে ভাষা আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেয়। এ সময়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা রাখার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন এবং বাংলার দাবি একেবারে উপেক্ষা করেন। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রয়ারী (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৯ বঙ্গাব্দ) সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল, জনসভা ও বিক্ষোভ মিছিল আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সরকার পাল্টা ১৪৪ ধারা জারি করে। ছাত্ররা ২১শে ফেব্রয়ারী ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করলে পুলিশ গুলি চালায় এবং রফিক উদ্দীন আহমদ, আব্দুল জব্বার, আবুল বরকত, আব্দুস সালাম সহ অনেকে নিহত হন এবং আরো অনেক আহত হন। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫৬ সালে উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্টভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ২১ শে ফেব্রয়ারী মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে। ২০০০ সালের ২১ ফেব্রয়ারী থেকে দিবসটি জাতিসঙ্ঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।
হাযেরীন, নিজের সম্পদ, প্রাণ, পরিবার বা বৈধ অধিকার আদায়ের জন্য কথা বলে, দাবি করে বা চেষ্টা  করে যদি কেউ নিহত হয় তবে সে ব্যক্তি শহীদ হন বলে হাদীস শরীফে বলা হয়েছে। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনায় আমরা হাদীসগুলি আলোচনা করেছি। এদেশের মানুষের মাতৃভাষায় সকল কার্য সম্পাদন করার জন্মগত ও ইসলাম নির্দেশিত অধিকার রক্ষার জন্য কথা বলে যারা নিহত হয়েছেন তাদের মৃত্যু শহীদী মৃত্যু বলে এ সকল হাদীসের আলোকে প্রতীয়মান হয়। এ সকল শহীদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব হলো প্রথমত, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা, দ্বিতীয়ত, তাদের জন্য দুআ করা এবং তৃতীয়ত, মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় তাদের রেখে যাওয়া দায়িত্ব আঞ্জাম দেওয়া।
আমরা দেখেছি যে, ব্যক্তি বা জাতির জীবনে যে কোনো নিয়ামত অর্জনে যাদের অবদান আছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অংশ এবং ইসলামের নির্দেশ। কাজেই যে সকল মানুষ আমাদের মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে। এজন্য সকল প্রকার পক্ষপাতিত্ব পরিত্যাগ করে তাদের ত্যাগের প্রকৃত তথ্য পরবর্তী প্রজন্মকে ও বিশ্বকে জানাতে হবে এবং তাদের স্বীকৃতির ব্যবস্থা করতে হবে।
কৃতজ্ঞতার অন্যতম দিক তাদের জন্য দুআ করা। বিভিন্ন হাদীসে রাসূলুল্লাহ [স] বলেছেন, কেউ তোমাদের কোনো উপকার বা কল্যাণ করলে তার প্রতিদান দিবে এবং তার জন্য দুআ করবে। এজন্য আমাদের দায়িত্ব তাদের জন্য সর্বদা দুআ করা। তাদের আখিরাতের কল্যাণের উদ্দেশ্যে সাদাকায়ে জারিয়া হিসেবে তাঁদের স্মৃতিতে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান তৈরি করা।
সম্মানিত উপস্থিতি, অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় যে, এ সকল মহান শহীদের জন্য দুআ করা পরিবর্তে আমরা তাদেরকে নিয়ে এমন কিছু কাজ করি যা ইহূদী-খৃস্টানদের অন্ধ অনুকরণ বৈ কিছুই নয়। আমরা শহীদ মিনারে ফুল প্রদান, খালি পায়ে হাঁটা, নীরবে দাঁড়িয়ে থাকা ইত্যাদি কর্মের মাধ্যমে শহীদদের স্মরণ করি’, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করিবা তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি। এগুলি এদেশের মানুষদের বা বাঙালী সংস্কৃতির অংশ নয়। ইউরোপীয় খৃস্টানদের সংস্পর্শে আসার আগে এদেশের হিন্দু বা মুসলমান কেউই এভাবে মৃতদের স্মরণ বা তাদের আত্মার শান্তি কামনাকরে নি। তেমনি এগুলি ইসলামী সংস্কৃতি বা দীনের অংশ নয়। রাসূলুল্লাহ , তাঁর সাহাবীগণ বা পরবর্তী যুগের মুসলিমগণ কখনোই এরূপ করেন নি। এগুলি সবই ইহূদী-খৃস্টান ধর্মের ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের অংশ। আমরা অন্ধভাবে তাদের ধর্মীয় অনুকরণ করি। নগ্নপদে গমন করা, বেদীতে ফুল অর্পন করা, নীরবে দাঁড়িয়ে থাকা ইত্যাদি কর্ম আর্য-ইউরোপীয় সভ্যতায় ও ধর্মে ইবাদতবা পূজা-অর্চনার অংশ। আর আমরা আমাদের শহীদদের পূজা, অর্চনা বা বন্দনা করি না বা করতে পারি না। আমাদের দায়িত্ব তাদের জন্য দুআ করা।
শহীদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য আমাদের মূল দায়িত্ব হলো, আমাদের প্রিয় মাতৃভাষাকে সমৃদ্ধ করে আন্তর্জাতিক মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করা।
হাযেরীন, মাতৃভাষার প্রতি ভালবাসা ও মাতৃভাষাকে মর্যাদা প্রদানের অর্থ এই নয় যে, বিদেশী ভাষা ঘৃণা করতে হবে বা তা শিক্ষা করা পরিহার করতে হবে। মাতৃভাষাকে ভালবাসতে হবে, তাকে সমৃদ্ধ করতে হবে, প্রয়োজন না হলে বিদেশী ভাষা পরিহার করতে হবে এবং পাশাপাশি প্রয়োজন অনুসারে বিদেশী ভাষা শিক্ষা করতে হবে। আমরা অনেক সময় মাতৃভাষা’-কে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের অযুহাতে ইংরেজী ভাষা শিক্ষা করতে অবহেলা করি। ফলে আন্তর্জাতিক কর্ম বাজারের অনেক সুবিধা থেকে আমাদের সন্তানগণ বঞ্চিত হয়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে আরবী ও ইংরেজী ভাষায় দখল থাকার কারণে ভারতীয়গণ কর্মের যে সুযোগ পান, বাংলাদেশীগণ তা পান না। অন্যান্য দেশেও প্রায় একই অবস্থা।
পাশাপাশি অনেক ধার্মিক মানুষ বিদেশী ভাষা বা কাফিরদের ভাষা মনে করে ইংরেজী শিক্ষা করাকে আপত্তিকর বা দীনের জন্য ক্ষতিকর বা দীনের জন্য অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করেন। অথচ প্রয়োজন মত এরূপ বিদেশী ভাষা বা ইহূদী-খৃস্টানদের ভাষা শিক্ষা করা রাসূলুল্লাহ [স] -এর নির্দেশ। প্রসিদ্ধ সাহাবী যাইদ ইবনু সাবিত আনসারী (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ [স]  যখন মদীনায় হিজরত করে আসলেন তখন আমি ১১/১২ বৎসরের তরুণ। ইতোমধ্যেই আমি কুরআনের অনেকগুলি সূরা মুখস্থ করেছি। রাসূলুল্লাহ [স] সূরাগুলি শুনে চমৎকৃত হন। আমার মেধা দেখে তিনি বলেন, যাইদ তুমি ইহূদীদের ভাষা, হিব্রভাষা ও সিরীয় ভাষা  শিক্ষা কর। তারা কি লিখে ও বলে সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত হতে চায়। তখন আমি মাত্র ১৫ বা ১৭ দিনের মধ্যে তাদের ভাষা শিক্ষা করি। এরপর রাসূলুল্লাহ [স] ইহূদীদেরকে কিছু লিখতে চাইলে আমি তা লিখে দিতাম এবং ইহূদী-খৃস্টানগণ কিছু লিখলে আমি তা তাঁকে পড়ে শুনাতাম।
সম্মানিত উপস্থিতি, মাতৃভাষার পাশাপাশি যে ভাষাটি শিক্ষা করা আমাদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় তা হলো আরবী ভাষা। আমরা আমাদের পিতামাতাকে ভালবাসি। কিন্তু এ ভালবাসা রাসূলুল্লাহ [স] -এর প্রতি ভালবাসার অন্তরায় নয়। আমরা আমাদের দেশ বা গ্রামকে ভালবাসি। কিন্তু এ জন্য মক্কা ও মদীনার প্রতি ভালবাসার ঘাটতি হতে পারে না। ঠিক তেমনি ভাবে মাতৃভাষার প্রতি ভালবাসা আরবীর প্রতি ভালবাসার অন্তরায় হতে পারে না। আরবী কোনো বিদেশী ভাষা নয়। আরবী আমাদের প্রতিটি মুসলিমের হৃদয়ের ভাষা, ঈমানের ভাষা ও দীনের ভাষা। প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব অন্তুত কুরআন কারীম বা নামাযে পঠিত কুরআনের সূরাগুলি ও যিক্র-দুআগুলি বুঝার মত আরবী ভাষা শিক্ষা করা। নিজের সন্তানদেরকেও এভাবে গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরী। সাধারণ জ্ঞান বা অসাধারণ জ্ঞানের নামে আমরা আমাদের সন্তানদেরকে এমন অনেক কিছু শিক্ষা দিই যা তাদের অধিকাংশের জন্যই দুনিয়া বা আখিরাতে কখনোই কোনো কাজে লাগবে না। অথচ আরবী শিক্ষার প্রতি আমরা ক্ষমাহীন অবহেলা করছি।
আরবী এখন বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিকভাষা। আরবী ভাষার সামান্য জ্ঞান ও ভাব প্রকাশের ক্ষমতা মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে দক্ষ ও অদক্ষ সকল শ্রমিকের জন্য ও ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও অন্যান্য পেশার মানুষদের জন্য অনেক সুবিধা বয়ে আনে। বৃটিশ যুগে এ দেশের স্কুলগুলিতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ১০০ নম্বরের আরবী পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল। এতে মুসলিম ছাত্রছাত্রীরা একটু চেষ্টা করলেই কুরআন বুঝতে সক্ষম হতেন এবং আরবী কিছু বলতে ও বুঝতে পারতেন। বাংলাদেশের জাতীয় পাঠ্যক্রমে আরবী শিক্ষার এরূপ ব্যবস্থা করা অতীব প্রয়োজনীয় ও সময়ের দাবি।
হাযেরীন, দুর্নীতি কমাতে এবং দেশকে সমৃদ্ধ করতে জাতীয় পাঠ্যক্রমে অন্তত ১০০ নম্বরের বাধ্যতামূলক আরবী অতি প্রয়োজনীয়। আমরা অধিকাংশ মুসলিম দৈনিক, সাপ্তাহিক ও ঈদের নামাযে সর্বদা কুরআন শুনি। এছাড়া অনেকেই কুরআন পড়ি। কিন্তু না বুঝার কারণে কুরআনে বারংবার উল্লেখিত ভয়াবহ দুর্নীততে লিপ্ত। মানুষের মধে পশু প্রবৃত্তি রয়েছে। এজন্য ভয় ও লোভ ছাড়া প্রকৃত সততা নিশ্চিত হয় না। সমাজ, আইন বা রাষ্ট্রের কাছে নিন্দিত বা নন্দিত হওয়ার ভয় বা লোভ মানুষকে দুর্নীতির প্ররোচনা থেকে কিছুটা রক্ষা করে। কিন্তু সকলেই জানে সমাজ, রাষ্ট্র বা আইনকে ফাঁকি দেওয়া যায়। আর সমাজ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সততার সঠিক মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়। এজন্য প্রকৃত সততা তৈরি করতে আল্লাহর ভয় ও লোভ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। আল্লাহ সকল কষ্টের পরিপূর্ণ পুরস্কার দিবেন এবং সকল অন্যায়ের শাস্তি দিবেন বলে অবচেতনের বিশ্বাস লাভের পর মানুষ যে কর্মটি আল্লাহর কাছে অন্যায় বলে নিশ্চিত জানতে পারে সে কাজ করতে পারে না। আমাদের দেশের অনেক ধার্মিক মানুষ মদ, ব্যভিচার ইত্যাদি পরিত্যাগ করেন, কিন্তু সুদ, ঘুষ, প্রতারণা, যৌতুক, কর্মে অবহেলা, মানবাধিকার নষ্ট, অবৈধ সম্পদ অর্জন ইত্যাদি অন্যায়ে লিপ্ত হন। এর কারণ দ্বিতীয় পর্যায়ের অন্যায়গুলি সম্পর্কে তার সচেতনতার অভাব। তিনি যদি কুরআন বুঝতে পারতেন তাহলে প্রতিদিন নামাযে বা নামাযের বাইরে যা কুরআন পড়তেন বা শুনতেন তাতেই তার মধ্যে এ সকল অন্যায়ের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হতো এবং তিনি ক্রমান্বয়ে এগুলি থেকে মুক্ত হতেন।
ধর্ম বিষয়ক কুসংস্কার আমাদের জাতীয় জীবনের অন্যতম সমস্যা। দরগা-মাজারগুলির দিকে তাকান। মাদকতা ও অনাচারের প্রসার ছাড়াও এ সকল স্থানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ কর্মঘন্টা ও টাকা নষ্ট হচ্ছে ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে। যদি আমাদের জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে আরবী শিক্ষার ব্যবস্থা থাকতো এবং সাধারন শিক্ষিত মানুষেরা কুরআন কিছুটা বুঝতেন তবে অধিকাংশ মানুষ এ সকল কুসংস্কার থেকে রক্ষা পেতেন। যে সকল অন্ধ বিশ্বাস মাজার পূজা, মাজারে অলস সময় যাপন, মাদকতা ও পাগলভক্তি সৃষ্টি করে সেগুলি সবই কুরআন বুঝলে দূর হয়ে যাবে।
মুহতারাম হাযেরীন, মাতৃভাষার প্রতি অবহেলার ফলে আমাদের দেশের আলিমগণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে আরবীতেও দুর্বল থেকেছেন। উর্দু ও ফার্সী ভাষার প্রতি অপ্রয়োজনীয় গুরুত্ব আরোপের ফলে একদিকে যেমন তালিবে ইলমগণ বাংলায় দুর্বল থেকেছেন, তেমনিভাবে তারা আরবীতেও দুর্বল থেকেছেন। উর্দু-ফার্সী ভাষা শিক্ষায় কোনো দোষ নেই। বরং এ দুই ভাষা সহ মুসলিম উম্মাহর অন্যান্য ভাষা, যেমন তুর্কি, সোহেলী, মালয়ী ইত্যাদি ভাষায় পারদর্শী আলিমগণ সে সকল ভাষার মূল্যবান গ্রন্থাদি বাংলায় অনুবাদ করবেন এবং বাংলার মূল্যবান গ্রন্থাদি সে সকল ভাষায় অনুবাদ করবেন এবং এভাবে উম্মাতের খেদমত করবেন। তবে সকল তালিবে ইলমকে উর্দু শিখতে হবে বলে মনে করা বা উর্দু বা ফার্সী ভাষাকে ইলম শিক্ষার জন্য উপযোগী মনে করা একেবারেই বাতিল ধারণা। এ কথা ঠিক যে, বাঙালী আলিম সমাজ মাতৃভাষার প্রতি তাদের দায়িত্ব পালন না করলেও উর্দু ও ফার্সী ভাষাভাষী আলিমগণ তাদের মাতৃভাষার প্রতি তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন। ফলে তাফসীর, হাদীস, ফিকহ ও ইসলামী জ্ঞানের অন্যান্য শাখায় অনুবাদ ও মৌলিক কর্মের বিশাল ভাণ্ডার গড়ে উঠেছে এ সকল ভাষায়। তবে এ সকল ভাষার কিতাবাদি কখনই আরবীর চেয়ে বেশি নয়। বরং ইসলামের মূল জ্ঞানভাণ্ডার আরবী ভাষাতেই রয়েছে। আমাদের আলিম ও তালিবে ইলমদের দায়িত্ব আরবী ও মাতৃভাষায় পারদার্শিতা অর্জন করে নিজের ভাষাকে এভাবে সমৃদ্ধ করা।
মুহতারাম হাযেরীন, বিশেষ করে আলিমদের জন্য মাতৃভাষায় বুৎপত্তি অত্যাবশ্যকীয়। আমরা দেখেছি যে, আল্লাহ মাতৃভাষা ছাড়া কোনো নবী-রাসূল প্রেরণ করেন নি। এজন্য মাতৃভাষায় বুৎপত্তি ছাড়া কোনো ব্যক্তি নায়েবে নবী বা ওয়রিসে নবী অর্থাৎ নবীর উত্তরাধিকারী হতে পারেন না। সর্বোপরি আমাদের মহান নবী মুহাম্মাদ [স] -এর সর্বশ্রেষ্ঠ বৈশিষ্ট্য ছিল ভাষার উচ্চাঙ্গতা ও চিত্তাকর্ষণীয়তা। কাজেই প্রতিটি আলিমের ও দীনের দাওয়াতে আত্মনিয়োজিত ব্যক্তির অন্যতম দায়িত্ব হলো মাতৃভাষায় উচ্চাঙ্গের সাহিত্যিক মান অর্জন করা, যেন তিনি তার জাতির মন, মানসিকতা, সুবিধা, অসুবিধা, সন্দেহ, সমস্যা ইত্যাদি ভালভাবে অনুভব করতে পারেন, এবং তার বক্তব্য, ওয়াজ, লেখনি ইত্যাদি সকল বাঙ্গালী শ্রোতার হৃদয় আলোড়িত করতে পারে। এজন্য বাংলার সকল তালিবে ইলম ও আলিমের দায়িত্ব মাতৃভাষা বাংলা ও দীনের ভাষা আরবীতে গভীর পারদর্শিতা অর্জন করা। এরপর যথাসম্ভব ইংরাজী ভাষা শেখা তাঁদের দায়িত্ব, কারণ ইংরেজীও বর্তমানে আমাদের দেশের লিসানে কওমবা জাতির ভাষা-সংস্কৃতির অংশ। এছাড়া আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে মুসলিম উম্মার পক্ষে ও বিপক্ষে আবর্তিত তথ্যাদি জানা ও উম্মাতকে জানানোর জন্যও আলিমদের ইংরেজি ভাষা জানা প্রয়োজন। এরপর কেউ ইচ্ছা করলে উর্দু, ফার্সী, তুর্কি, মালয়, সোহেলী ইত্যাদি মুসলিম জনগোষ্ঠীর ভাষা শিক্ষা করতে পারেন।
এ বিষয়ে ফুরফুরার পীর মাওলানা আবূ বাকর সিদ্দীকীর  একটি ওসীয়ত প্রণিধানযোগ্য। ১৯২৯-৩০ সালে তিনি বিভিন্ন প্রত্রিকায় তাঁর ওসীয়ত ছাপেন। এতে তিনি উর্দু ফার্সীকে অন্যান্য ভাষার কাতারে রেখে আরবী, বাংলা ও ইংরেজী ভাষা শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি লিখেন: সেই জন্য মোছলমান মাত্রকেই দ্বীনের এল্ম আরবী শিক্ষা করা অবশ্য প্রয়োজন। ইংরাজী, বাংলা, উর্দু, ফারছী প্রভৃতি ভাষার দ্বারাও এছলামের খেদমত এবং উহা জেন্দা রখিতে পারা যায়। কিন্তু উহার মূলে আরবী শিক্ষার নেহায়াত জরুরৎ। কেননা আরী না হইলে এছলামকে যথাথরূপে বুঝিতে পারা যাইবে না। .... দেশীয় ভাষা বাংলা, রাজ ভাষা ইংরেজী খুব আবশ্যক।”  মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাওফীক প্রদান করুন। আমীন!!


  1. সূরা আর-রাহমান: ১-৪ আয়াত।
  2. সূরা রূম: ২২ আয়াত।
  3. সূরা ইবরাহীম: ৪ আয়াত।
  4. বিস্তারিত জানতে মুকুল চৌধুরী সম্পাদিত, ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকাশিত ভাষা আন্দোলনবইটি পড়ন।
 5. বুখারী, আস-সহীহ ৬/২৬৩১; ইবনু হিব্বান, আস-সহীহ ১৬/৮৪; ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী ১৩/১৮৬-১৮৭।
 6. জন্ম ১৮৪৬খৃ/১২৬৩হি, মৃত্যু ১৯৩৯খৃ/১৩৪৫হি
7. হক্বীকতে ইনসানিয়্যাত, ১১২ পৃষ্ঠা।