Saturday 1 April 2017

দ্বীনী ইলম শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলাত :



ভূমিকা :
আল্লাহ তায়ালা মানব জাতিকে জীবনের চলার পথে সঠিক পথ নির্দেশনা দেওয়ার লক্ষ্যে যুগে যুগে অসংখ্য নাবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন । তাঁর প্রেরীত নাবী-রাসূলদের নিকট হেদায়েতের যে বাণী পাঠিয়েছেন , তাকে বলা হয় ওহী ।যুগে যুগে প্রেরীত নাবী-রাসূলদের মধ্য থেকে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নাবী হলেন বিশ্বনাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা:) । তাঁর উপর অবতারিত কিতাব কুরআনূল কারীম গোটা মানবজাতির জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান । আর রাসূলে কারীম (সা:) এর যবান নি:সৃত বাণীকে বলা হয় সুন্নাহ বা হাদীস । ওহী বলতে কুরআন ও সুন্নাহ দুটোকেই বুঝানো হয়ে থাকে । কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণের মধ্যেই নিহিত রয়েছে মানব জাতির জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ, মুক্তি ও সফলতা । তাই কুরআন-সূন্নাহর জ্ঞান অর্জন করা প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর উপর ফরজ করে দেওয়া হয়েছে । কারণ একমাত্র ওহীভিত্তিক জ্ঞানার্জনের মাধ্যমেই ইসলামী শরীয়ার হালাল-হারাম, করনীয় ও বর্জনীয় বিষয় জানা সম্ভব হতে পারে । কোন পথে চললে আমাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ ও সফলতা , আর কোন পথে রয়েছে ব্যর্থতা এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত রয়েছে শাস্তি ও লাঞ্চনা, তা সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত হয়েছে । অতএব দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি ও মুক্তি পেতে হলে কুরআন-সুন্নাহর অনুসরণের বিকল্প কোন পথ নেই । আর কুরআন-সুন্নাহর অনুসরণ কুরতে হলে উহার জ্ঞান অর্জন করতে হবে । তাই কুরআন-সুন্নাহর আলোকে দ্বীনী ইলম শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলাত সম্পর্কে আলোচিত হচ্ছে ।
কুরআনুল কারীমের আলোকে দ্বীনী ইলম শিক্ষার গুরুত্ব :
০১. ওহীর প্রথম বাণী :
قا ل الله سبحا نه وتعا لى 
* اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ-( سورة زمر –أية 01)
অনুবাদ : পড়ো তোমার প্রভূর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন ।
ব্যাখ্যা :
দ্বীনী ইলম শিক্ষার গুরুত্ব সব চেয়ে বেশি হওয়ার কারণে ওহীর প্রথম বাণীতে ইরশাদ হয়েছে اقرأ অর্থাৎ পড়ো । তার মানে দ্বীনী ইলম শিক্ষা করা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে ।
০২. আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ ফরমান :
জ্ঞানী ও মূর্খ কখনো সমান হতে পারে না । 
قا ل الله تبارك وتعا لى :
قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لا يعلمون ( الزمر 9- )
অনুবাদ : হে নবী আপনি বলে দিন , যে ব্যক্তি ( কুরআন-সুন্নাহ তথা শরীয়াতের বিধান ) জানে আর যে জানে না , তারা কি উভয়ে সমান গতে পারে ? তার মানে কখনই সমান হতে পারে না ।
০৩. যাদেরকে দ্বীন ইলমের জ্ঞান দান করা হয়েছে , তাদেরকে বিশেষ মর্যাদা দান করা হয়েছে ঐসব লোকদের উপর , যারা তা জানে না ।
قال الله سبحا نه وتعا لى :
*يَرْفَعِ اللَّهُ الَّذِينَ آَمَنُوا مِنْكُمْ وَالَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٌ (المجادلة-11) 
অনুবাদ : তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের মধ্য থেকে যাদেরকে দ্বীন ইসলামের জ্ঞান দান করা হয়েছে , তাদেরকে বিশেস সন্মান বা মর্যাদা দান করা হয়েছে ।
ব্যাখ্যা :
আলোচ্য আয়াতে কারীমা দ্বারা একথা প্রতীয়মান হলো যে, ঈমান্দার ব্যক্তিদের মধ্য থেকে যাদেরকে ওহীর জ্ঞানে জ্ঞানী করা হয়েছে , আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে বিশেষ সন্মানে ভূষিত করেছেন ।অর্থাৎ- তাদের মস্তকে মর্যাদার বিশেষ মুকুট পরিয়ে দিয়েছেন ।
০৪. অন্য আয়াতে কারীমায় ইরশাদ হয়েছে ।
قال الله تبارك وتعا لى :
* شَهِدَ اللَّهُ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ وَالْمَلَائِكَةُ وَأُولُو الْعِلْمِ قَائِمًا بِالْقِسْطِ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ ( العمران-18)-
অনুবাদ : ইরশাদ হচ্ছে যে, আল্লাহ তায়লা স্বয়ং এ কথার উপর স্বাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই । আল্লাহর স্বাক্ষ্যের পাশাপাশি একথার স্বাক্ষ্য দিচ্ছেন
ফেরেশ্তামন্ডলী ও ওলামায়ে কেরাম । আল্লাহ তায়ালাই একমাত্র ইনসাফের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন ।
ব্যাখ্যা :
আলোচ্য আয়াতে কারীমায় আল্লাহ তায়ালা তার সত্তার একত্ববাদের স্বাক্ষ্য দিয়েছেন । প্রথমে তিনি নিজে , দ্বিতিয় পর্যায়ে ফেরেশ্তামন্ডলী ও তৃতীয় পর্যায়ে ওলামায়ে কিরামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে । এর দ্বারা একথা প্রতীয়মান হয় যে,
মর্যাদার দিক থেকে (নাবী-রাসূল ব্যতিত ) ফেরেশ্তাকুলের পরেই ওলামায়ে কেরামের অবস্থান ।
০৫. আল্লাহ তায়ালা আরও ইরশাদ ফরমান : যারা ওহীর জ্ঞানে জ্ঞানী তথা আলিম , তারাই আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করেন ।
قا ل الله تعالى : 
* إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَماء – ( الفا طر -28 )
অনুবাদ : একমাত্র ( ওহীর জ্ঞানে জ্ঞানী ) আলিমগণই আমাকে ভয় করে থাকে ।
০৬.আল্লাহ তায়ালা আরও ইরশাদ ফরমান :
قال الله تعا لى : 
فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ ( النحل-43)
অনুবাদ : তোমরা যারা জানো না , যারা জানে তাদের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করে জেনে নাও ।
০৭. একমাত্র আলিমগণই ভাল-মন্দ ও হক বাতিলের মাঝে পার্থক্য নির্ণয় করতে পারে । এ পর্য়ায়ে কুরআনূল কারীমে ইরশাদ হয়েছে :
وَمَا يَعْقِلُهَا إِلَّا الْعَالِمُونَ-(العنكبوت- 43) 
অনুবাদ : একমাত্র আলেমগণই ( ভাল-মন্দ ও হক-বাতিলের মাঝে পার্থক্য নির্ণয় করতে পারে ।
হাদীসের আলোকে ইলম শিক্ষার ফজিলাত :
প্রথম হাদীস:
عن أنس بن مالك ( رض) قال : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم : " طلب العلم فريضة على كل مسلم " ( رواه ابن ماجه-ررقم الحديث-224- مطبع مصر )
وفى رواية : على كل مسلمة 
অনুবাদ : আনাস ( রা:) হতে বর্ণিত : তিনি বলেন : রাসূলে কারীম ( সা: ) বলেছেন : প্রতিটি মুসলিম পুরুষের উপর দ্বীনী ইলম শিক্ষা গ্রহণ করা ফরজ । 
অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর উপর দ্বীনী ইলম শিক্ষা গ্রহণ করা ফরজ । ( তথ্য সূত্র- ইবনে মাযাহ = হাদীস নং- ২২৪ )
عن معا وية (رض) قا ل : قا ل رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم : "من يرد الله خيرا يفقه فى 
الدين _ " 
( رواه البخا رى، رقم الحديث: 7312-ومسلم، 1037- كل مطبع مصر- )
অনুবাদ : মুয়াবিয়া (রা: ) হতে বর্ণিত : তিনি বলেন ।( রাসূল সা:) ইরশাদ ফরমায়েছেন : আল্লাহ তায়ালা যার জন্য বিশেষ কল্যাণ কামনা করেন,তাকে দ্বীনী জ্ঞান অর্জন ও বুঝার তাওফিক দান করেন । 
(
তথ্যসূত্র : সহীহ বুখারী= হাদীস নং-৭৩১২- ও সহীহ মুসলিম=হাদীস নং ১০৩৭ )
তৃতীয় হাদীস :
عن ايى هريرة ( رض) قا ل : قا ل رسو ل الله صلى الله عليه وسلم : " اذا ما ت الا نسا ن انقطع عنه عمله الا من ثلا ثة الا من صدقة جارية او علم ينتفع به او ولد صالح يدعو له " _ 
( رواه مسلم ، رقم الحديث : 1631، مطبع مصر )
অনুবাদ : আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত : তিনি বলেন : রাসূল (সা: ) বলেছেন : যখন মানুষ মৃত্যু বরণ করে , তখন তার সব আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায় । কিন্তু
তিনটি আমল (উহার ছুওয়াব বন্ধ হয় না । ) । 
০১. ছাদক্বায়ে জারিয়া অর্থাৎ- প্রবাহমান ছাদক্বাহ । 
০২. ইলম : যার দ্বারা জনগণ উপকৃত হয় । 
০৩. নেক সন্তান : যে তার জন্য দোওয়া করে । 
(
তথ্য সূত্র : সহীহ মুসলিম=১৬৩১ )
চতুর্থ হাদীস :
عن قيس بن كثير قال : قدم رجل من المدينة على أبي الدرداء وهو بدمشق فقال ما أقدمك يا أخي ؟ فقال حديث بلغني أنك تحدثه عن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال أماجئت لحاجة ؟ قال لا قال أما قدمت لتجارة ؟ قال لا قال ما جئت إلا في طلب هذا الحديث ؟ قال فإني سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول من سلك طريقا يبتغي فيه علما سلك الله له طريقا إلى الجنة وإن الملائكة لتضع أجنحتها رضاء لطالب العلم وإن العالم ليستغفر له من في السموات ومن في الأرض حتى الحيتان في الماء وفضل العالم على العابد كفضل القمر على سائر الكواب إن العلماء ورثة الأنبياء إن الأنبياء لم يورثوا دينارا ولا درهما إنما ورثوا العلم فمن أخذ به أخذ بحظ وافر 
( رواه احمد، رقم الحديث: 21207- والترمذى- 2682- وابن ماجه- 223- كل مطبع مصر )
অনুবাদ: তাবেয়ী কাছির ইবনু ক্বায়েছ (রহ: ) বলেন : আমি দামেশকের মসজিদে বিশিষ্ট সাহাবী আবুদ্দারদাহ (রা:) এর সহিত বসাবস্থায় ছিলাম , এমন সময় তার নিকট জনৈক ব্যক্তি এসে বল্লেন : হে আবুদ্দারদাহ ! আমি সুদূর মদিনাতুর রাসূল থেকে আপনার নিকট শুধু একটি হাদীস শুনার জন্য এসেছি । আপনি নাকি উহা রাসূল (সা:) হতে বর্ণনা করে থাকেন । তখন আবুদ্দারদাহ (রা:) বল্লেন : হ্যা , আমি রাসূল ( সা: ) বলতে শুনেছি : তিনি বলেন ; যে ব্যক্তি ইলম আন্বেষণ করার লক্ষ্যে কোন পথ অবলন্বন করে , আল্লাহ তায়ালা এর বিনিময়ে তাকে জন্নাতের পথ সমূহের মধ্য থেকে একটি পথে পৌছিয়ে দেন এবং ফেরেস্তাগণ ইলম অন্বেষণকারীদের সন্তুষ্টির জন্য তাদের নিজেদের পাখা বিছিয়ে দেন । এতদ্ব্যতীত যারা আলেম , তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীতে যারা আছেন , তারা সকলেই আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা ও দোওয়া করতে থাকেন । এমনকি পানির মধ্যে 
অবস্থিত মাছসমূহ তাদের জন্য দোওয়া করে থাকেন । আলেমের ফজিলাত সাধারণ
আবেদের (ইবাদতকারী ) উপর এমন , যেমন পূর্ণিমার চাঁদের মর্যাদা অন্যান্য তারকারাজির উপর । আর আলিমগণ হচ্ছেন নাবীদের ওয়ারিশ । নাবীগণ কোন দীনার বা দিরহাম ( টাকা-পয়সা ও ধনসম্পদ ) রেখে যান না । তারা মিরাছ হিসেবে রেখে যান শুধু ইলম । সুতরাং যে ব্যক্তি ইলম অর্জন করলো সে সৌভাগ্যের পূর্ণ অংশ গ্রহণ করলো । ( তথ্যসূত্র - আহমদ= হাদীস নং ২১২০৭- তিরমিজি= ২৬৮২- ইবনু মাজাহ =২২৩ )
পঞ্চম হাদীস :
عن ابى اما مة البا هلى (رض) قال : قا ل رسول الله صلى الله عليه وسلم : ذكر لرسول الله (ً ص) رجلان، احدهما عابد والا خر عا لم ، فقا ل رسول الله (ًص ) " ان الله وملائكته واهل السما وا ت والارض حتى النملة فى حجرها حتى الحوت ،ليصلون على معلم الناس الخير "_ 
(
তথ্যসূত্র : তিরমিজি
সূল (সা: ) এর নিকট দুজন ব্যক্তি সম্পর্কে আলোচিত হলো । তাদের একজন আবেদ ( সাধারণ ইবাদতকারী ) আর অপরজন আলেম । ( কার ফজিলাত বেশি ?) রাসূল (সা:) বললেন : আবেদের উপর আলেমের শ্রেষ্ঠত্ব যেমন আমার শ্রেষ্ঠত্ব তোমাদের মধ্যে একজন সাধারণ ব্যক্তির উপর । অত:পর রাসূল (সা:) বললেন : আল্লাহ তায়ালা ও তার ফেরেস্তাগণ এবং আসমান যমিনের অধিবাসীরা এমনকি গর্তের পিপীলিকা ও পানির মাছ পর্যন্ত যে ব্যক্তি মানুষকে ভাল কথা বলে তথা ইলম শিক্ষা দিয়ে থাকেন ,তার জন্য দোওয়া করে ।। ( কার ফজিলাত বেশি ?) রাসূল (সা:) বললেন : আবেদের উপর আলেমের শ্রেষ্ঠত্ব যেমন আমার শ্রেষ্ঠত্ব তোমাদের মধ্যে একজন সাধারণ ব্যক্তির উপর । অত:পর রাসূল (সা:) বললেন : আল্লাহ তায়ালা ও তার ফেরেস্তাগণ
এবং আসমান যমিনের অধিবাসীরা এমনকি গর্তের পিপীলিকা ও পানির মাছ পর্যন্ত যে ব্যক্তি মানুষকে ভাল কথা বলে তথা ইলম শিক্ষা দিয়ে থাকেন ,তার জন্য দোওয়া করে । ( তথ্যসূত্র : তিরমিজি )
৬ষ্ঠ হাদীস : 
عن انس (رض) قا ل : قا ل رسول الله صلى الله عليه وسلم : " من خرج فى طلب العلم فهو فى سبيل الله " 
( رواه الترمذى ، رقم الحديث : 2647- والد ار مى )
অনুবাদ: আনাস ( রা : ) হতে বর্ণিত : তিনি বলেন-রাসূল (সা:) বলেছেন : যে ব্যক্তি ইলম অন্বেষণের লক্ষ্যে নিজ বাড়ি থেকে বের হলো , সে প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত আল্লাহর রাস্তায় রয়ে গেল ।’’
( তথ্যসূত্র : তিরমিজি=২৬৪৭ দারমি ।)
আহবান :

তাই আসুন ! আমরা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য হাছিলের চেতনা নিয়ে দ্বীনী জ্ঞান নিজে অর্জন করি এবং আমাদের সন্তানদের দ্বীনীশিক্ষায় শিক্ষিত করিমহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে নেক তাওফিক দান করুন । - আমীন

No comments:

Post a Comment