Monday, 20 March 2017

বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান

বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান :
শেষ কিস্তি : 
লক্ষ্য : শিকড়ের সন্ধানে

০৩. গণিত শাস্ত্রে মুসলমানদের অবদান :
ভূমিকা :
বিজ্ঞানে অংক শাস্ত্রের অবদান মাএর মতো । সকল বিজ্ঞানের সূত্রপাত অংক শাস্ত্র হতেই আরম্ভ হয় । মুসলিম যুগে অংক শাস্ত্রের প্রাথমিক অনুপ্রেরণা আসে পবিত্র কুরআন হতে । আর সেই অনুপ্রেরণা হতে শাস্ত্র চর্চার মর্যাদা লাভ করে অষ্টাদশ শতাব্দিতে । আলক্বুরআনে সংখ্যা চর্চা বিষয়ক অনেক আয়াত আছে । এসব সংখ্যা বিষয়ের প্রেরণা মুসলিম বিজ্ঞানীদের গণিত চর্চায় উদ্বুদ্ধ করেছে ।
গণিত শাস্ত্রের ক্রমবিকাশের যুগ :
আব্বাসীয় খলীফা আবুজাফর আল মনসুরের ( ৭৫৪-৭৭৫ খৃ: ) রাজত্বকাল থেকেই মুসলমানদের মাঝে গণিত শাস্ত্রের উপর গবেষণার সূত্রপাত হয় । খলীফা আল মনসুরের আমলে আবু ইসহাক আলফাজারী নামে জনৈক পন্ডিত মনীষী গণিত ও জ্যোতিষ শাস্ত্র নিয়ে গবেষণা শুরু করেন । ফলিত জ্যোতিষ শাস্ত্রে তাঁর চিন্তা ধারা ছিল খুব উচ্চাঙ্গের । তিনি অংক শাস্ত্রের যন্ত্রপাতি এবং সে সন্বন্ধে পুস্তক প্রণয়ন করেন । তাঁর প্রণীত গ্রন্থ এখনও অনেক বিষয়ে প্রামাণ্য হিসেবে গৃহীত হয়ে থাকে । আলফাজারী প্রথম আরব গণনা পদ্ধতি সুনিয়ন্ত্রিত করে আরব বর্ষ গণনা ও দিনপঞ্জি প্রণয়ন করেন । আলফাজারী ৭৭৭ খৃ: মৃত্যু বরণ করেন । 
মধ্যযুগে মুসলিম মনীষীবৃন্দ ভারত ও গ্রীক ভাষায় গণিত ও জ্যোতিষ শাস্ত্রের উপর রচিত বিভিন্ন গ্রন্থ আরবী ভাষায় অনুবাদ করেন । এসব অনূদিত গ্রন্থ মুসলিম বিজ্ঞানীদের গণিত ও জ্যেতিষ শাস্ত্র চর্চায় তাঁদের জ্ঞানের দ্বার উন্মোচিত করে । 
খলীফা হারুন ও মামুনের শাসনামলে মুসলিম বিজ্ঞানীরা গণিত, জ্যামিতি ও জ্যোতিষ শাস্ত্রে আধুনিক সভ্যতার লাইম লাইট নিয়ে আসেন । মূলত: হারুন-মামুনের শাসনামল ছিল গণিত, জ্যামিতি ও জ্যোতিষ শাস্ত্র চর্চার স্বর্ণযুগ । সে সময়ে যেসব মুসলিম বিজ্ঞানী আলোচ্চ শাস্ত্রের উৎকর্ষ সাধন করেন , তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন যথাক্রমে :
০১. আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে মুসা আলখারেজমী : 
(
মৃত: ৮৭৪ খৃ: )
আলখারেজমী পারস্যের খিবা প্রদেশের খারিজমে জন্ম গ্রহণ করেন । আল খারেজমী ছিলেন গণিত শাস্ত্রের একজন কালজয়ী প্রতিভা । তাঁকে আধুনিক গণিত শাস্ত্রের জনক বলা হয় । তিনি বীজগণিতকে অংক শাস্ত্রের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করত: গণিত শাস্ত্রকে মর্যাদা সম্পন্ন করে তোলেন ।
আল খারেজমী প্রণীত গণিত শাস্ত্রের উপর গ্রন্থসমূহ :
০১. ইলমুল জাবের ওয়াল মুকাবিলা :
এটি বীজ গণিতের শ্রেষ্ঠতম গ্রন্থ । এ গ্রন্থের নাম আল জাবের হতেই ইউরোপীয় অনুবাদকগণ ইংরেজিতে বীজ গণিতকে `Algebra’ নামে অভিহিত করেছেন । এ গ্রন্থটি পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয় । আল খারেজমী রচিত এ গ্রন্থটিকে বীজ গণিতের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে । তিনি জ্যামিতিকে ব্যবহার করেছেন বীজ গণিতের সমস্যা সমাধানে, তেমনিভাবে শুদ্ধ গণিতকেও জ্যামিতির সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করেছেন । 
এ ছাড়াও পাটিগণিতে তিনি কিতাবুল হিন্দআল জাম ওয়াত তাফরিক ইত্যাদি গ্রন্থ রচনা করেন । যা পরবর্তীতে রেফারেন্সর মর্যাদা লাভ করে ।
গণিত শাস্ত্রে আলখারেজমীর উদ্ভাবন :
গণিত শাস্ত্রে আল খারেজমী সর্বপ্রথম শূণ্য বা জিরোর আবিষ্কার করেন । পাটিগণিত ও বীজ গণিতের যাবতীয় সূত্র তিনিই প্রবর্তন করেন । 
এ ছাড়াও জ্যামিতিতে ত্রিভূজ, চতুর্ভূজ, বৃত্ত, পিরামিড প্রভতির আয়তন , পরিধি ইত্যাদি নিরূপনের প্রনালী নিয়ে আলোচনা করেছেন তাঁর রচিত গ্রন্থের মধ্যে ।
আলখারেজমী ছাড়াও গণিত শাস্ত্রে মুসলিম বিজ্ঞানীদের নামসমূহ :
আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ঈসা আলমাহানী । 
আল বিরুনী । 
নাসির ইদ্দিন তুসী । 
উমর খৈয়াম । 
আব্দুল্লাহ আল বাত্তানী । 
আবুল কাশেম আহমদ । 
আবু জাফর মুহাম্মাদ । 
হাসান ইবনে মুসা বিন শাকির । 
আবুল হাসান সাবিত ইবনে কুরা । 
আহমাদ ইবনে আব্দুল্লাহ । 
আল কারখী । 
হামিদ বিন খিযির । 
আলী ইবনে আহমাদ আবুল হাসান আন্নাসাবী আলখোরাসানী । 
আহমাদ ইবনে ইউনুস মিশরী 
প্রমূখ গণিতবিদদের আবিষ্কৃত এলগোরিদম ও লগারিদমকে ভিত্তি করেই কম্পিউটার ল্যাঙ্গুয়েজ তৈরী হয় । বীজগণিত ও ত্রিকোণমিতির বিভিন্ন সূত্র ও সমস্যা সমাধানে মুসলিম গণিতবিদদের অবদান অগ্রগণ্য । গোলাকার ত্রিকোণমিতির সূত্রপাত, ত্রিকোণমিতিতে সাইন, কোসাইন , ট্রানজেন্টের ব্যবহার, বিভিন্ন কোসাইন সূত্র ইত্যাদি মুসলিম গণিতবিদদেরই অবদান ।
০৪. জ্যোতির্বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান :
জ্যোতির্বিজ্ঞানে মুসলিম মনীষীদের অবদান অবিস্মরণীয় ।
আলফারগামী ( মৃত: ৬৭০ খৃ: ) সর্বপ্রথম গণিতের সাহায়্যে জ্যোতির্বিদ্যার আলোচনা করেন ।
বানু মুসা ভ্রাতৃত্রয় ( ৯ম শতাব্দী ) ক্রান্তিবৃন্তের তীর্যকতা , পৃথিবী কক্ষের অপভৃ ও অনভৃ নির্ণয় করেন ।
ছাবিত ইবনে কুরা ( ৮২৬-৯০১ খৃ: ) সৌর বৎসরের দৈর্ঘ নির্ণয় করেন ।
আলবাত্তানী ( ৮৫৮- ৯২৯ খৃ: ) জ্যোতির্বিজ্ঞানের যে তালিকা প্রনয়ন করেন জিজ আল শামিলনামে আজও তা পরিচিত । 
আল বিরুনী ( ৯৭৩- ১০৪৮ খৃ: ) চন্দ্রের লন্বন, কোন স্থানের দ্রাঘিমা ও অক্ষরেখা নির্ণয় ও দিগংশ স্থানাংক আবিষ্কার করেন ।
০৫. পদার্থ বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান :
পদার্থ বিজ্ঞানে মুসলিম বিজ্ঞানীদের মধ্যে ইবনে আল হাইয়্যান ( ৯৬৫- ১০৪৪ খৃ: ) এর নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য । তাঁকে অপটিকমের জনক বলা হয় ।
আল বিরুনী ( ৯৭৩- ১০৪৮ খৃ: ) পদার্থের তুল্য ওজন পরিমাপ করেন । 
বানু মুসা ভ্রাতৃত্রয় ( ৯ম শতাব্দী ) , 
আল ফারাজী ( ৮৭২- ৯৫০ খৃ: ) , 
আল খাজেনী ( ১২শ শতাব্দী ) , 
 
ইবনে ইউনুস ( মৃত: ১০০৯ খৃ: ) , 
ইবনে মাসউদ আল সিরাজী ( ১২৩৬- ১৩৩১ খৃ: ) 
প্রমূখ বিজ্ঞনীগণ বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিশেষ অবদান রাখেন ।
০৬. ভূগোল শাস্ত্রে মুসলমানদের অবদান :
ভূগোল শাস্ত্রে মুসলিম ভূগোলবিদদের অবদান অনস্বিকার্য । তাঁরাই সর্বপ্রথম ভৌগলিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভূতত্ত্ব অনুশীলন এবং এ শাস্ত্রকে মর্যাদার আসনে সমাসীন করেন । মুসলমানরা বিভিন্ন রাজ্য বিজয়ের কারণে ভূগোল শাস্ত্র জানতে অনুপ্রাণীত হন । তাঁরাই সর্বপ্রথম সূরত আল আরদা তথা পৃথিবীর মানচিত্র এবং ভূকম্পাস আবিষ্কার করেন । 
আলখারেজমী, আল মাসউদী , ইবনে বুত্তা, আল বিরুনী, আল মুকাদ্দাসী, উমর খৈয়াম ও ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ এ বিষয়ে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন ।
এ ছাড়াও মুসলিম মনীষীগণ দর্শন, ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান, প্রত্নতত্ত্ব, স্থাপত্যশিল্প ও সাহিত্য-সংস্কৃতিতে ছিলেন অগ্রপথিক । কালক্রমে মুসলিম জ্ঞান-বিজ্ঞানের উত্তরাধিকারী হয় ইউরোপ । তারা এসব জ্ঞান-বিজ্ঞানের উত্তরাধিকারী হয়ে মুসলিম বিজ্ঞানীদের নাম পরিবর্তন বা বিকৃত করত: নিজেদের নামে চালিয়ে দিয়েছে । তার পরও অনেক অমুসলিম ঐতিহাসিক তাদের রচিত গ্রন্থে জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান অকপটে স্বীকার করেছেন । - ( সমাপ্ত )

-উপস্থাপক
মো: ইসহাক মিয়া 
সহকারী অধ্যাপক ( কামিল হাদীস বিভাগ ) 
বিজুল দারুল হুদা কামিল স্নাতকোত্তর মাদরাসা 
বিরামপুর, দিনাজপুর ।

3 comments:

  1. মুসলিম বিজ্ঞানীদের বিজ্ঞান চর্চার উৎসঃ
    (১)আল ক্বুরঅআন
    (২)সহীহ আল হাদীস
    (৩)নফল সালাত/নামাজ
    (৪)মাসনূন দোয়া-দরুদঃ (ক)রব্বিঝিদনী ঈলমা (খ) রবি্বশ্ রাহলী, সদরী, ওয়াসসিরলী আমরী, ওয়াহলুল উগদাতাম মিল লিসানী। (আল কুরআন)
    (খ)আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিয়ান ও রিজকান তাইয়্যেবাহ ওয়া আমালান মুতাকাববিলা। বাংলা অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে এমন ইলম চাই যা আমার জন্য উপকারী। এমন রিজিক চাই যা আমার জন্য পবিত্র ও হালাল। (আল হাদীস)
    (৩)ইজতিহাদ¬¬
    (৪)ইতমিনান
    (৭)ইলহাম-ইলকা
    (৮)ইস্তিখারা
    (৫)দান-সদকা
    (৫)প্রাচীন গ্রীক, রোমান, ব্যবিলীনীয়, মিশরীয়, ভারতীয় ইত্যাদি বৈদেশিক সূত্র।
    মুসলিম বিজ্ঞানীদের সকল প্রকার অআবিস্কার মানব কল্যাণবান্ধব।কারণ, তাঁরা ঈলমান নাফিয়ান এর অধিকারী উপরোক্ত বিভিন্ন আমলিয়াতের কারণে।তবে মুসলিম বিজ্ঞানীরা যেহেতু মানব জাতির অবিচ্ছেদ্য অংশ সেহেতু পদস্খলন ব্যতিক্রমধর্মী কোন ব্যাপার নয়।

    ReplyDelete
  2. শ্রীধর আচার্য (৮৭০ খ্রিঃ - ৯৩০ খ্রিঃ) একজন প্রাচীন ভারতীয় গণিতবিদ, সংস্কৃত পণ্ডিত এবং দার্শনিক। তিনি প্রাচীন ভারতের একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাংখ্যিয় গণিতজ্ঞ ও দার্শনিক ছিলেন। হিন্দু আচার্যদের মধ্যে শূন্য (0) সম্বন্ধে শ্রীধর আচার্যের বিবৃতিই সর্বাপেক্ষা বিশদ।
    শ্রীধর আচার্যের জন্ম দক্ষিণ রাঢ়ের (বর্তমান হুগলি জেলার) ভুরিশ্রেষ্ঠ (ভুরশুট) গ্রামে। তিনি পাটিগণিত ও বীজগণিতকে আলাদা বিষয় রূপে গণ্য করে পৃথক পুস্তক রচনা করেন। পাটিগণিতের বর্গমূল, ঘনমূল নির্ণয়ের পদ্ধতি এবং তৈরাশিক পদ্ধতিতে সমস্যার সমাধান সম্পর্কে তার অবদানের কথা বিভিন্ন পুস্তকে পাওয়া যায়।
    তিনি বীজগণিতের উপর একটি রচনাও লিখেছিলেন, বীজগণিত, যেটি হারিয়ে গেছে, কিন্তু কিছু উদ্ধৃতি পরবর্তী গণিতবিদদের রচনায় রয়ে গেছে। কিছু ঐতিহাসিক বিশ্বাস করেন যে শ্রীধর হয়তো গণিত-পঞ্চবিষী নামে আরেকটি গাণিতিক গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।
    শ্রীধর আচার্য শূন্যের উপর একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি পাটিগণিত থেকে বীজগণিতকে পৃথক করেন বলে ধারণা করা হয়। তিনি ন্যায়কন্দলী গ্রন্থের শেষে লিখেছিলেন।
    শ্রীধর আচার্য অধ্যাত্মচিন্তা ও দর্শনবিষয়ক গ্রন্থ রচনা করে সমগ্র ভারতে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। তিনি পান্ডুদাসের আশ্রয়ে থেকে প্রশস্তপাদ রচিত পদার্থধর্মগ্রন্থের টীকা লিখেছিলেন।
    এছাড়াও, শ্রীধর আচার্যের নামের সাথে "শ্রীধারাচার্য সূত্র" বা "শ্রীধারাচার্য পদ্ধতি" নামেও একটি পরিচিত সূত্র সম্পর্কিত। এটি দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধান খুঁজে বের করতে ব্যবহৃত হয়।

    ReplyDelete
  3. জাবরের মধ্যে পাওয়া বীজগণিতটি অ্যারিথমেটিকাতে পাওয়া বীজগণিতের তুলনায় কিছুটা বেশি প্রাথমিক এবং অ্যারিথমেটিকা বাকবিতণ্ডিত, যেখানে আল-জাবর সম্পূর্ণরূপে আলংকারিক । [১৭] যারা আল-খুয়ারিজমিকে সমর্থন করেন তারা এই বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করেন যে তিনি " পক্ষান্তর " এবং "ভারসাম্য"র পদ্ধতিগুলি চালু করেছিলেন (সমীকরণের এক দিক থেকে অন্য দিকে পদের স্থানান্তর, অর্থাৎ, সমীকরণ এর বিপরীত দিকে একই পদের বাতিলকরণ) যা 'আল-জাবর' শব্দটি দ্বারা মূলত বোঝানো হয়েছে,[১৮] এবং তিনি দ্বিঘাত সমীকরণগুলি সমাধান করার একটি বিস্তৃত ব্যাখ্যা দিয়েছেন,[১৯] এছাড়া তাঁর বীজগণিত আর মাথাব্যথার কারণ ছিল না " সমস্যার একটি সিরিজ পুনঃমীমাংসা করার সাথে, কিন্তু একটি বর্ণনামূলক বর্ণনা যা আদি পদের সমন্বয়ে গঠিত হয়,যেখানে সকল বিন্যাস সমীকরণ গঠনের জন্য সকল নিয়ম কানুন অবশ্যই দিবে,যা অতঃপর স্পষ্টভাবে অধ্যয়নের সত্য বস্তু গঠন করে"। তিনি একটি সমীকরণের স্বার্থে সমীকরণটি অধ্যয়নও করেছিলেন এবং "সাধারণ পদ্ধতিতে, কারণ এটি কোনও সমস্যার সমাধান করার ক্ষেত্রে কেবল উত্থিত হয় না, তবে এটি একটি অসীম শ্রেণীর সমস্যার সংজ্ঞা দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে কাজে আসে"।

    অপর ফার্সি গণিতবিদ ওমর খৈয়ামকে বীজগাণিতিক জ্যামিতির ভিত্তি শনাক্ত করার জন্য সম্মানিত করা হয় এবং তিনি ঘন সমীকরণের সাধারণ জ্যামিতিক সমাধান আবিষ্কার করেছিলেন। তাঁর গ্রন্থ ট্রিটাইজ অন ডেমোনস্টেশনস অফ প্রবলেমস অফ অ্যালজেবরা (১০৭০)এ বীজগণিতের নীতিমালা রচনা করেন, যা ফার্সি গণিতের অংশ যা শেষ পর্যন্ত ইউরোপে স্থানান্তরিত হয়েছিল। [২০] তবুও আরেক ফার্সি গণিতবিদ শারাফ আল দিন আল তুসি ঘন সমীকরণের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বীজগাণিতিক এবং সংখ্যাসূচক সমাধান খুঁজে পেয়েছিলেন । [২১] তিনি একটি ফাংশনের ধারণাও বিকাশ করেছিলেন। ভারতীয় গণিতবিদ মহাবীর এবং দ্বিতীয় ভাস্কর ফারসি গণিতবিদ আল-কারাজি,[২২] এবং চীনা গণিতবিদ চু শি-চিয়ে, ঘনের বিভিন্ন ঘটনা সমাধান, দ্বিঘাত সমীকরণ, কুইন্টিক এবং উচ্চতর-পর্যায়ের বহুপদী সমীকরণ সমাধানের জন্য সংখ্যাগত একটা পদ্ধতি ব্যবহার করেন।১৩তম শতকে, একটি ঘন সমীকরণ গণিতবিদ ফিবোনাচ্চি দ্বারা সমাধান ইউরোপীয় বীজগণিতে রেনেসাঁ শুরুর একটি প্রতিনিধি। আবু আল-আসান ইবন আলি-আল-কালাসাদি (১৪১২-১৪৮৬) "বীজগণিতে প্রতীকবাদের প্রবর্তনের দিকে প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন"।তিনি ∑ n 2, ∑ n 3 গণনা করেছিলেন এবং বর্গমূল নির্ধারণের জন্য ক্রমাগত আনুমানিক পদ্ধতিটি ব্যবহার করেছিলেন।[২৩]

    ReplyDelete